আমতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার খেকুয়ানী বাজার সংলগ্ন প্রবাহমান খেকুয়ানী খাল বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মান্নান হাওলাদার ও ইউপি সদস্য ইউসুফ মৃধা। ওই খাল ভরাট করে সেখানে নির্মিত হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। খালটি ভরাট করায় খেকুয়ানী বাজারের কয়েকশ পরিবার দুর্ভোগে পড়েছেন। দ্রুত ওই খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ভূক্তভোগীরা। জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের খেকুয়ানী খালে ১৯৯০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে। বাঁধ নির্মাণ করায় ওই খালটির একাংশ খেকুয়ানী বাজারের পেছনে থেকে যায়। বাঁধ দেওয়ার সুযোগে গত ২০ বছর পূর্বে (২০০০ সালে) তথ্য গোপন করে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ওই খালকে নাল জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত নেন স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মান্নান হাওলাদার ও ইউপি সদস্য ইউসুফ মৃধা। খাল বন্দোবস্ত নেওয়ায় বিষয়টি তারা এতদিন গোপন রাখেন। গত বছর ওই খালে বাঁধ দিয়ে তারা মাছ চাষ শুরু করেন। এরপর সম্প্রতি তারা ওই খাল বালু দিয়ে ভরাট করলে তখন বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের নজরে আসে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, খালটি বালু দিয়ে ভরাট করে কয়েকটি স্থাপনা উত্তোলন করেছেন ও আরো নতুন নতুন স্থাপনা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। বন্দোবস্ত পাওয়া সূত্রের মালিক ইউপি সদস্য ইউসুফ মৃধা ও আব্দুল মান্নান হাওলাদার ওই খালের ভরাটকৃত জমি বিভিন্ন মানুষের কাছে প্লট আকারে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানায়। স্থানীয় বাসিন্দা জয়নুল আবেদীন হাওলাদার বলেন, এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসনের নিকট অভিযোগ দেওয়ার পরেও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ওই খালটি ভরাট হওয়ায় খেকুয়ানী বাজারের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। ইউপি সদস্য ইউসুফ মৃধা ও আব্দুল মান্নান হাওলাদার বলেন, ২০ বছর পূর্বে (২০০০ সালে) ওই খালটি সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত এনেছি। গত বছর মাছ চাষ করেছি। সম্প্রতি বাজার সম্প্রসারণের জন্য খালটি বালু দিয়ে ভরাট করেছি। গুলিশাখালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার) দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি দায়িত্ব থাকা অবস্থায় এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে ঘটনাস্থলে গিয়ে খালটি ভরাট কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এখন আমি অন্যাত্র বদলি হয়ে চলে এসেছি। বর্তমানে ওখানে কি হচ্ছে সেটা আমার জানা নেই। সহকারী কমিশনার (ভূমি) দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জমান মুঠোফোনে বলেন, প্রবাহমান খাল কিভাবে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রবাহমান খাল বন্দোবস্ত দেওয়া যায় না। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে।
Leave a Reply